আজকের সর্বশেষ
No post found
প্রচ্ছদ | মিডিয়া
চট্টগ্রামে আজ ভয়াল ২৯ এপ্রিল: ত্রাণ কাজে কাছ থেকে দেখা মার্কিন অপারেশন ‘সী এঞ্জেল’
প্রতিনিধি
বৃহস্পতিবার ২৯ এপ্রিল ২০২১ ২২:৫৭

চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ যারা ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল এতদঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সেই ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়টি এবং এর পরবর্তী তান্ডবলীলা প্রত্যক্ষ করেছিলেন প্রতি বছর এ দিনটি এলেই ভয়ে আঁতকে উঠেন তারা।
ঐদিন বিশ্বের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় কয়টির অন্যতম ‘মারিয়ান’ নামের ঘূর্ণিঝড়টি ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার গতি নিয়ে দানবের আঘাতে লন্ডভন্ড করেছিল চট্টগ্রাম ও এ বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চল। যারা সে ভয়ংকর রাতটি প্রত্যক্ষ করেছিলেন তাদের নিকট এ দিনটির কথা ভোলার নয়।
‘ঘূর্ণিঝড়ের রাতে তখন আবহাওয়া সিগন্যাল নং-১০। মহাবিপদসংকেত এটি। চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা সন্দ্বীপ এর তৎকালীন সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ‘সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ’, ‘দৈনিক রূপালী’ সহ প্রকাশনা গ্রুপের সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি। ঐসময় তার প্রকাশনা গ্রুপের দৈনিক রূপালী তখন বের হওয়ার অপেক্ষায় ট্রায়ালের কাজ চলছিল।
সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ ও ঐ গ্রুপের পত্রিকার রিপোর্টার হিসেবে চট্টগ্রামে ব্যুরোর দায়িত্বে কাজ করছিলাম আমি। ‘ঘূর্ণিঝড়ের রাতে আবহাওয়া সিগন্যাল নং-১০ মহাবিপদসংকেত দেখে আতংকে ছিলাম সন্ধ্যা হতেই। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম মা-বাবা, ভাই বোনদের কাছে। রাত দশটার পর পরই শুরু হল দমকা হাওয়া। চট্টগ্রাম বন্দরে চাকুরীর সুবাদে পিতার বন্দরের ইস্ট কলোনীর বাসার নীচের তলায় সমুদ্র থেকে জোয়ারের পানি ধেয়ে আসতে লাগল সাথে প্রচন্ড বাতাস।
চারদিকে অন্ধকার বিদ্যুৎহীন। সে এক আতংকের মধ্যে আমরা সবকিছু পরিত্যাগ করে নীচ তলা থেকে দ্রুত চারতলায় অপরজনের বাসায় আশ্রয় নিলাম। রাত যতই বৃদ্ধি পাচ্ছিল শো শো বাতাসের ভয়ংকর গতি আর চারদিকে উড়ন্ত টিন ছিটকে পড়ার আওয়াজ আতংকিত করছিল সবাইকে।
এক পর্যায়ে দেখলাম চোখের সামনে জানালা উড়ে গেল। অপর জানালাগুলো চাদর দিয়ে বেঁধেও রাখতে পারছিলামনা। খোলা জানালার বাইরের দিকে তাকিয়ে সে ভয়ংকর দৃশ্য আজও চোখে ভাসে। পরদিন বাঁচব কিনা বুঝতে পারছিলামনা আমরা মেঝেতে শুয়ে আল্লাহর নাম ঝপতে ঝপতে রাত কাটিয়ে সকালে বাইরে যা দেখলাম তা আজও ভুলতে পারিনা।’
দেখা গেল, জোয়ারে সমুদ্রের পানিতে বন্দর এলাকা নিমজ্জিত। মৃত গরু ছাগল চারদিকে ভাসছে। বড় বড় গাছ বিদ্যুৎ খুঁটি সবই উপড়ানো। বের হওয়ার কোন উপায় নেই রাস্তায়। পরদিন পতেঙ্গাসহ সর্বত্র উপকূলীয় এলাকায় নারী পুরুষ শিশুর লাশের সারি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রত্যক্ষ করলাম। কোথাও পানি নেই বিদ্যুৎ নেই। নেই পর্যাপ্ত খাবারের সংগ্রহ। সে এক নারকীয় দৃশ্য।
পরদিন সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ঢাকা থেকে এলেন এক ঝাঁক সাংবাদিক নিয়ে উদ্দেশ্য তার নির্বাচনী এলাকা সন্দ্বীপের বিধ্বস্ত এলাকায় যাবেন। সমুদ্র উত্তাল থাকায় নৌবাহিনীর গানবোট ‘পদ্মা’তে করে সন্দ্বীপের উপকূলে গিয়েও সমুদ্র উত্তাল থাকায় সেখানে ভিড়তে না পেরে পুনরায় চট্টগ্রামে ফিরে আসলাম ঢাকা থেকে আগত সাংবাদিকসহ।
আমার এখনও স্পষ্ট মনে পড়ে দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল ভাই, রয়টারের তৎকালীন করেসপনডেন্ট নিজাম আহমেদ ভাইসহ অনেকেই এসেছিলেন চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে। বিদেশী স্যাটেলাইটে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড়টির সূত্রপাত হয়েছিল এভাবে।
৯১’ সালের ২২ এপ্রিল মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে প্রথমে বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ২৪ তারিখে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হতে থাকে। আবহাওয়া বিশেষঞ্জরা এর নাম দিয়েছিল ‘মারিয়ান’ । আস্তে আস্তে গতিবেগ বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকে এর তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে আরম্ভ করে।
আবহাওয়া সংকেত মতে ক্যাটাগরী-৪ ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য হয়ে ঘন্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রামের জেলার উপকূলীয় অঞ্চল ও জেলাসমূহ সন্দ্বীপ, উরিরচর, আনোয়ারা, বাঁশখালী এবং টেকনাফ থেকে শুরু করে উপকূলীয় হাতিয়াভোলা প্রভৃতি দ্বীপে আঘাত হানে। ৬ থেকে ৮ মিটার (২০-২৬ ফুট) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের প্রলয়ংকরী এই ঘূর্ণিঝড়ে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
প্রায় ১০ লক্ষ ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ১ কোটি মানুষ হয়ে পড়ে গৃহহীন। আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় তৎকালীন সময়ে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঘূর্ণিঝড়ের গতি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে থাকা ১০০ টন ক্ষমতার ক্রেনটিকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কর্ণফুলী ব্রীজে নিয়ে দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে ফেলে।
এছাড়া বন্দরের জেটিতে নোঙর করা ছোট বড় জাহাজ ও জলযান ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোন কোন টিকে ডাঙায় উঠিয়ে ফেলে। এতবড় একটি প্রলয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের দুর্গত মানুষকে সাহায্যে এগিয়ে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্টসহ কয়েকটি দেশ ।
উপকূলীয় অবকাঠামো সম্পূর্ণরুপে বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় এবং বাংলাদেশে তৎকালীন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার প্রায় দুই মাসের মাথায় বড় ধরনের এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হিমশিম খেয়ে মার্কিন সাহায্য চেয়ে পাঠান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ডাকে সাড়া দেয় এবং এতে নৌ, মেরীন সেনারা বিপুলভাবে অংশ নেয়ায় এই সহায়তা কার্যক্রমে মূলত: মার্কিন তৎপরতাই ছিল বেশী। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আদেশ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দুর্যোগ ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমের সবচাইতে বড় এ ত্রাণ তৎপরতার নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন সী এঞ্জেল’। মে মাসের ১০ তারিখ থেকে মার্কিন মেরিন, নৌ, সেনাবাহিনী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বয়ে ৭ হাজার সদস্যের টাস্কফোর্স বাংলাদেশে অবতরণ করতে শুরু করে।
এর নেতৃত্বে ছিলেন জাপানের ওকিনাওয়ায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির থ্রি মেরিন এক্সপেডিশনারি ব্রিগেড এর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেনরি সি. স্টাকপোল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌ সেনাদের এমপিবিয়াস টাস্ক ফোর্স (এটিএফ) তখন ইরাক যুদ্ধে অংশ নেয়ার পর বঙ্গোপসাগর হয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছিল। তাৎক্ষনিকভাবে তাদেরকেও বাংলাদেশের সহায়তার জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়।
দায়িত্ব নেয়ার পর জেনারেল স্টাকপোল চট্টগ্রামে এসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত থাকায় ত্রাণ তৎপরতায় তখন বেশী জরুরী মাধ্যম মেরিন হেলিকপ্টার, দ্রুতগামী এলসিএসি (ল্যান্ডিং ক্র্যাফট এয়ার কুশন) উভচর যান যোগে তখন প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সন্দ্বীপ, ভোলা, হাতিয়া, বাঁশখালী প্রভৃতি প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাতে শুরু করেন।
এ তৎপরতায় মার্কিন নেতৃত্বে অন্যান্য বিদেশী সহায়তাকারী জাপান, যুক্তরাজ্য, বিভিন্ন এনজিও কেয়ার,অক্সফাম প্রভৃতিকেও অন্তভুক্ত করা হয় তাদের কার্যক্রমের সাথে। তখন মার্কিন সেনাদের ব্যাপক অংশগ্রহণে নানা প্রশ্ন এসেছিল। বিদেশে কেউ কেউ এটাকে বাংলাদেশে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপনের পাঁয়তারা বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
এজন্য মার্কিন সরকার বাংলাদেশ সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর সাতে সমন্বিত হয়ে অভিযানে জয়েন্ট টাস্কফোর্স গঠন করেন। এসব নানা আশংকা দূর করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেরিত টাস্কফোর্সের পক্ষ আগত দেশী বিদেশী সাংবাদিকদের সরেজমিনে দেখাতে তাদের সাথে হেলিকপ্টারও নৌ জাহাজে নেয়ার ব্যবস্থা করেন। মার্কিনীদের এসকল ত্রাণ তৎপরতার বেশ কয়েকটিতে সিএইচ-৪৬ সী নাইট, ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাকহক প্রভৃতি সেনা ও মেরিন সেনাদের হেলিকপ্টারে চড়ে সরেজমিন দেখলাম। প্রথমে গেলাম সন্দ্বীপের কলেজ মাঠে।
পরে অন্যান্য স্থানগুলো। হেলিকপ্টারে লাইফ স্যুট পরতে এসময় সহযোগিতা পেলাম মেরিন কর্ণেল রেন্ডি এল ওয়েস্ট এর কাছ থেকে (পরে তিনি সে পদোন্নতি পেয়ে উপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন)। দেশের প্রত্যন্ত দ্বীপগুলোতে মেরিনদের সাথে আনা দ্রুুতগামী উভচরযান এলসিএসি (ল্যান্ডিং ক্র্যাফট এয়ার কুশন) ও সিএইচ-৪৬ সী নাইট হেলিকপ্টারে চড়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর কাজ কিভাবে দুর্যোগের সময় পৌঁছানো হয় কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করলাম।
দেখলাম দূষিত পানিকে ওয়াটার পিউরিফিকেশন মেশিনের সাহায্যে মূহুর্তে বিশুদ্ধ করে পানের উপযোগী করা হয়। সাংবাদিকদের জন্য মার্কিন টাস্কফোর্স কমান্ডার স্টাকপোলের দেখা পাওয়া ছিল রীতিমত কঠিন ব্যাপার। স্টাকপোলের সাক্ষাতকার পাওয়ার আশায় স্থানীয় ও বিদেশী সাংবাদিকদের অনেকেই চট্টগ্রামে ভীড় জমিয়েছিলেন সেই ১৫ মে থেকে।
সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য মার্কিন টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রিক্রুটমেন্ট সেন্টারে এসময় একটি প্রেস সেন্টার খোলা হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন ৫ম মেরিন এক্সপিডিশনারি ব্রিগেড পাবলিক এফেয়ার্স অফিসার ক্রিস্টোফার সি জিলেট ও লেফটেন্যান্ট কেনেথ বি. রস।
ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের (ইউএসআইএস) তথ্য প্রধান কার্লোস আরানাগা এবং মিডিয়া প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দ আশাদুজ্জামান বাচ্চু ভাইকে একাজে টাস্কফোর্সকে সহযোগিতা করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিদিনকার মত ২০ মে সকাল সাড়ে আটটায় পৌঁছে গেলাম সেই মিডিয়া সেন্টারে। তখনও সাংবাদিকদের অনেকে এসে পৌঁছাননি। বিদেশী সাংবাদিকদের মধ্যে এসোসিয়েটেড প্রেস এপি’র দিল্লী প্রতিনিধি দিলীপ গাঙ্গুলী এবং নিউইয়র্ক থেকে আগত তাদের ফটো সাংবাদিক, জাপানী বার্তা সংস্থা ও রয়টার সহ জনাকয়েক সাংবাদিক এসেছেন মাত্র।
এসময় হঠাৎ লেফটেন্যান্ট কেনেথ বি. রস একটি কাগজ হাতে ছুটে আমাদের কাছে এসে সাংবাদিকদের তালিকা থেকে আমাদের নাম নিশ্চিত করে বললেন, আমরা চাইলে বাংলাদেশে ত্রাণতৎরপতার দায়িত্বে নিয়োজিত কমান্ডার লে. জেনারেল হেনরী সি. স্টাকপোলের প্রেস ব্রিফিং নিতে পারি। আমরা উপস্থিত যে গুটিকয়েক সাংবাদিক ছিলাম সেখানে সবাই তাড়াতাড়ি গাড়ীতে চেপে বসলাম।
জেনারেল স্টাকপোল আগে থেকেই বিমান বন্দরে রানওয়েতে অপেক্ষা করছিলেন। চট্টগ্রামের সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু ( বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সপরিবারে অবস্থানরত) এবং ঢাকা থেকে আগত সাংবাদিকসহ আমাদের দেখে সহাস্যে সবার সাথে করমর্দন করলেন। পরপরই একে একে সবার প্রশ্নের উত্তর দিলেন এ চতুর জেনারেল। ত্রাণ বিতরণে বাংলাদেশের স্থানীয় প্রশাসনের দুর্বলতার দিক তুলে ধরেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, মার্কিন টাস্কফোর্সের মূল কাজ ত্রাণ সামগ্রী যত দ্রুত সম্ভব পৌঁছিয়ে দেয়া এবং পানি বিশুদ্ধকরণ এবং জীবনরক্ষাকারী অন্যান্য তৎপরতায় অংশ নেয়া। উপসাগরের যুদ্ধ শেষে ক্লান্ত মেরিন সেনারাএখন ক্লান্ত তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফিরে যেতে চায় কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেনারেল স্টাকপোল মৃদু হেসে বলেন, ‘মার্কিন দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকার যতদিন চায় আমরা ততদিন থাকব।’
সৈন্যরা ক্লান্ত একথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘মে’র শেষ সপ্তাহ নাগাদ আমরা আমাদের দায়িত্ব শেষ করতে পারব আশা রাখছি।’ পরে মার্কিনীরা ঠিকই কথামত বাংলাদেশে তাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বড় একটি ত্রাণ তৎপরতা বাংলাদেশে শেষ করে দেশে ফিরে যায়। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর ধারণা কি প্রশ্নটি করার সুযোগ পেয়েছিলাম ।
তিনি তাঁর কক্ষে বাংলাদেশের উপর একটি বড় ফাইল বের করে দেখিয়ে বললেন, বাংলাদেশের মাটি এশিয়ায় অন্যতম উর্বর আমরা যাতে এই উর্বর মাটিকে কাজে লাগাতে পারি।
অভিযোগের সুরে বললেন, আমাদের দেশের মানুষ কর দেয়না সরকারকে। তিনি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করে আমার প্রশ্নের উত্তর শেষ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা থিংক ট্যাংক র্যান্ড-এ ১৯৯৪ সালে পল এ. ম্যাককেথির লেখা ‘ অপারেশন সী এঞ্জেল এ কেস স্ট্যাডি’র তথ্য মতে, ঐসময় মার্কিনারা ঠিকসময় সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসায় কমপক্ষে ২ লক্ষ লোকের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।
মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, সম্পাদক, এসময় বাংলা।

মিডিয়া এর সর্বশেষ










মন্তব্য করুন